রূপকাঠের নৌকা – মধুময় পাল
Author : Madhumoy Pal
Publisher : Manikarnika - মণিকর্ণিকা
Out of stock
Publisher | Manikarnika - মণিকর্ণিকা |
Language | Bengali |
প্রচ্ছদ : গণেশ হালুই | নামাঙ্কণ : দেবব্রত ঘোষ
দুপুর ঘুমোতে আসে এই পথে।
শান্ত, পাড়াগার রাত্রির নিঃসঙ্গ দিঘির মতন।
চোখের পাতার মতো দরজাকপাটবন্ধ পড়ে থাকে দোকানপাট। গন্ধেশ্বরী ভাণ্ডার-এর রোয়াকে থালাবাটিবাসনের মুর্শিদাবাদি ফেরিঅলা ঘুমোয়। মাংসের দোকানের গা ঘেঁষে শুয়ে থাকে টাইগার। পুরসভার কুচকুচে কালো টাইম-কলে সিংহের মাথা ঝিমোয়। হাওড়া মিষ্টান্ন ভাণ্ডার-এর ফেলে দেওয়া দইয়ের হাঁড়ির ওপর বিন বিন মাছি ওড়ে। বড়ুয়া বেকারির গলি থেকে মিঠে গন্ধ বাতাসে ভাসে।
জেগে থাকে রামাশ্রয় দাস। জুতো-চপ্পল সেলাই করে, পালিশ করে আর রামলীলার গান গায়।
এই পথ একদিন নদী ছিল। ইতিহাসে লেখা আছে। ডিঙি যেত, বালাম যেত, সাম্পান যেত। সওদাগরের ডিঙা এই পথে ভেসে দক্ষিণ-পুবে বিদ্যায় পড়ে সাগরে পাড়ি দিত। ফিরতও এই পথে। জলদস্যুদের সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছে সওদাগরের মাঝি-মাল্লার। বিশ শতকের গোড়ায় নওগাঁর মোড়ে ডিঙির গলুই পেয়েছিল এক চাষা মাটি খুঁড়ে। পরে প্রত্নতত্ত্বের লোকজন পেয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র, লন্ঠন, লোহার বালা, অঙ্কুশ¾ কোন সাবেককালের, আর একটা পায়ের কঙ্কাল এবং পঞ্চধাতুর রাধিকা। এসব যখন পাওয়া যায়, দেশের শাসক ইংরেজ। সাহেবদের ক্যাম্প পড়েছিল খোজাখুঁজির জন্য। সে এক কর্মযজ্ঞ । হ্যাট-কোট-পরা সাদামুখোদের সঙ্গে নেটিভদের ভাব-ভালোবাসার অনারকম স্বদেশি পর্ব। উত্তরপঞ্চান্নর জমিদার অঘোরকৃষ্ণ রায় লিখিত ‘বংশাবলী’-তে এই বিবরণ আছে। এখান থেকে দু-ক্রোশ দুরে, মাটির অনেক নীচে কারুকাজ করা একখণ্ড স্তম্ভও পাওয়া যায়। প্রত্নতত্ত্বের একদল এক্সপার্ট মত দেয়, নদীর তীরে রাজবাড়ি ছিল। অবশ্য সে মত টেকেনি। একখণ্ড স্তস্তের বেশি আর কিছু মেলেনি বিস্তর খোঁড়াখুঁড়ি করেও। তা দিয়ে গোটা রাজবাড়ির অস্তিত্ব বিশ্বাস করানো যায়নি।
কী নাম ছিল সেই নদীর? ইতিহাস ঘেঁটে বিশেষজ্ঞরা জেনেছে, মেঘবতী বা মেঘাই।
Book Review
There are no reviews yet.