কলকাতার ক্যাবারে: বাঙালি, যৌনতা এবং মিস শেফালি

লেখিকা বলছেন সাক্ষ্যাত আলাপ বছর পাঁচেকের। নাম জানতাম অবশ্য ছোট থেকেই, পোস্টারে-ও দেখেছি আগে হাতিবাগান-শেয়ালদার মোড়ে, চোখ পুরোটা না তুলে। আমার মধ্যবিত্ত মূল্যবোধে তিনি অশ্লীলতার দ্যোতক বই আর কিছু ছিলেন না। হঠাত কি করেই বা তিনি – ই হয়ে গেলেন আকাডেমিক ডিসকোর্স? সেদিনের নাইটক্লাবের সাব-কালচার কি আজ পাল্টা সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক প্রতিঘাত? এই সব অস্বস্তি নিয়েই তাই এই কাজ শুরু। আমার কমফর্ট জোনের থেকে বেশ কয়েক গজ এগিয়ে এসে।
শ্লাট-ওয়াক তো আমরাও করতে পারি, সিগারেট-মদ ও চলে, তাই বলে আমাদের উচ্চতর ফেমিনিসম-এ ওর ‘নেংটি পরা ক্যাবারে’ কে জায়গা করে দেব নাকি? হাজার হোক, ওর প্রলেতারিয় শরীরেও তো ছিল ঊগ্র প্রতিক্রিয়াশীল গন্ধ! উদ্বাস্তু বয়ঃসন্ধির মেয়ের ওই উল্লাসের সাথে একলা বেঁচে থাকার ফর্মুলাটাও তো মেলে না দেশভাগ পরবর্তী বিপন্নতার চেনা স্টিরিওটাইপের সাথে। এক দিনের জন্যেও ভিক্টিম নন তিনি, বরং আজন্মের অ্যাচিভার। অভিজাত হাওয়াইয়ান থেকে সস্তা পর্ণ থিয়েটারে তিনি অনায়াসে বয়ে যান একই রাতে, একই কলকাতার দুই প্রান্তে, দুই জাতের দর্শকের সামনে।
তাতে ভদ্রলোকেরা নাক শিটকোলেও কি বলবে তৃতীয় স্রোতের নারীবাদ? পন্যায়ন, পুঁজিবাদ, রাজনীতির ডান-বাম এই সবের বাইরে এই বই তাঁর অপরাজেয়, অপরিচিত নারী জীবন।