Publisher | Chhonya - ছোঁয়া |
Binding | Hardbound |
Language | Bengali |
গল্পকার স্বপন পাণ্ডা লিখছেন,
“সাহিত্যে চলতি সময়ের স্পদনকে চিরায়ত রূপ দেওয়া খুব সহজ নয়। যাঁরা পারেন, তাঁদের প্রতিভা ও স্পর্ধাকে কুর্নিশ। আমাদের এই মহামারি-শাসিত দুঃস্বপ্ন-তাড়িত যাপনকালকে তরুন কথাকার পাতাউর জামান গভীর মমতায়, এক অভিনব লিখনশৈলীতে যেভাবে ‘আমাকে খুন করলে কেন?’ উপন্যাসে আখ্যানবদ্ধ করেছেন, তার জন্য তাঁকে আন্তরিক অভিনন্দন। তাঁর এই সদ্যরচিত উপন্যাসের কেন্দ্রে আছে মহামারীর কোপে কাজ-হারানো, হাজার হাজার মাইল হেঁটে দেশ-গাঁয়ে ফিরতে চাওয়া, বাঁচতে চাওয়া লাখ লাখ পরিযায়ী শ্রমিকদের একজন, আমাদের এই বাংলার অখ্যাত শেরপুর গাঁয়ের বুলবুল।
পরিযায়ীরা হাঁটছিল দিল্লি মুম্বাই সুরাট ঔরঙ্গাবাদ কত কত হাজার মাইল দূর থেকে হাইওয়ে ধরে রেল লাইন ধরে। এই দেশ তাদের নিজের, এই রেললাইন তার স্বদেশের, কিন্তু রাষ্ট্র তা কোনোদিন স্বীকার করেনি, করে না। রাষ্ট্রের রেল তাই তাদের বহন করে দেশ-গাঁয়ে পৌঁছে দেয় না, বরং পিষে দিয়ে চলে যায়। রক্তাক্ত লাশ, পাশে পথের সম্বল রুটি রক্তমাখামাখি হয়ে পড়ে থাকে। অনেক কষ্টে বুলবুল কিন্তু পথ ভেঙে ভেঙে ফিরতে পেরেছিল গাঁয়ে, কিন্তু ঘরে সে ঢুকতে পারেনি। গাঁয়ের প্রান্তে স্কুলবাড়িতে বাধ্যতামূলক চোদ্দ দিনের নিভৃতাবাসে তাকে থাকতে হয়, আর তেরোতম দিন শেষ হবার আগে, প্রতিবাদী আপোষহীন বুলবুলকে তার সঙ্গী-সাথীরাই মাঝরাতে নির্মম ভাবে খুন করে, তার পেট চিরে জিব ছিঁড়ে বস্তায় ভরে পুঁতে দেয় নির্জন তালগাছের তলায়। মৃত যুবকটি গোসল পেল না, জুটল না এক টুকরো কাফন, সাড়ে তিন হাত জমি, একটু হাত-পা ছড়িয়ে মাটির গভীরে মৃতের মর্যাদায় শুয়ে থাকার সৌভাগ্য হল না তার। আব্বা-আম্মার কাছে ফেরা হল না, দোলনের সঙ্গে জোছনারাতের সব গল্প তার ফুরিয়ে গেল। আদরের বুলবুল এখন বেওয়ারিশ লাশ হয়ে শুয়ে থাকে, নিজের খেয়াব আর খোয়াব ভাঙার গল্প বলে যায়। আল্লার কাছে তার কাতর প্রশ্ন, ‘…এই পৃথিবীতে আল্লা তার বান্দাদের সব সময় পরীক্ষা নেয়। কষ্টে রাখে। যাতে তিনি বুঝতে পারেন, কষ্ট সহ্য করে কে তাঁর পথে আছে, আর কে পথভ্রষ্ট হচ্ছে। আমি জানি আমি এখনো পথভ্রষ্ট হইনি। তবে কেন … কষ্ট আল্লা?
Book Review
There are no reviews yet.