আপনি কি দেশদ্রোহী? – পার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়

তখন ১৯৩৮ সাল। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা তখন ভারতের, বাংলার কোণে কোণে প্রাণ দিচ্ছেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে। সমস্ত মিটিং মিছিল নিষিদ্ধ। জালিয়ানওয়ালাবাগ, ভগৎ সিং, উধম সিং, বিনয়-বাদল-দীনেশ, অনুশীলন সমিতি, যুগান্তর, বাঘা যতীন, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা, সূর্য সেনের চরম আত্মত্যাগের পর গান্ধীর কংগ্রেসি আন্দোলন দানা বাঁধছে। আর এদিকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ কাশীর রাস্তায় প্রকাশ্যে রুটমার্চ করছে। বোঝাই যায় ব্যাপারটা কী হচ্ছিল!

কোনও দিনও আমি আরএসেএস-এ ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কোনও আলোচনা শুনিনি। কিন্তু শিবাজীর জীবন নিয়ে অনেক অনেক আলোচনা, অনেক বক্তৃতা শুনেছি। বর্ধমান ওটিসি-তে সেই কেশব দীক্ষিত শিবাজীকে নিয়ে তিন-চারদিন ধরে চিত্তাকর্ষক গল্প বলেছিলেন। সেই আফজল খাঁ-কে লুকনো বাঘনখ দিয়ে চিরে মেরে ফেলা, আর মিষ্টির পিপের ভেতরে লুকিয়ে আওরাঙ্গজেবকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যাওয়া —এসব। কিন্তু নেতাজির দেশ থেকে লুকিয়ে বেরিয়ে যাওয়া নিয়ে কখনও কোনও আলোচনা শুনিনি। ক্ষুদিরাম, বাঘা যতীন, সূর্য সেন, প্রীতিলতা, কল্পনা দত্তকে নিয়ে কোনও আলোচনা কখনও শুনিনি।

এখন জানি কেন শুনিনি। আরএসএস ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে কোনোভাবেই অংশগ্রহণ করেনি। বরং, সিভিল ডিফেন্স হয়ে কাজ করে ব্রিটিশদের সাহায্য করেছিল। তারপর এখন জানা যাচ্ছে, সাভারকারের মত বড় বড় হিন্দুত্ববাদী নেতারা মুচলেকা দিয়ে ব্রিটিশদের জেল থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রেখেছিলেন!