• Earn reward point, redeem on your next purchase JOIN US NOW

বাংলার ডাকাত কালী মিথ ও ইতিহাস

Author : Pinaki Biswas
Publisher : Khori - খড়ি প্রকাশনী
275.00

ডাকাতকালীর নাম শোনেনি এমন বাঙালী বিরল। বাংলার গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে আছে যার অসংখ্য থান, মন্দির। যে দেবীকে পুজা করত একান্তভাবেই বাংলার লুঠেরা, ঠ্যাঙাড়ে, দস্যুরা কালক্রমে তারাই হয়ে গেছেন সার্বজনীন দেবী। শাস্ত্রের ভয়ংকরী ভবানীর বিবর্তন ঘটেছে কৌমসমাজের লৌকিক দেবতায়। হিন্দু মুসলিম খৃষ্টান সমস্ত ধর্মের ডাকাতরাই নিঃসংকোচে আরাধনা করেছে ধর্মনিরপেক্ষ দেবীর। যিনি একই রূপে সাধক রামপ্রসাদ, কাজী নজরুল কিংবা অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির আরাধ্যা হয়ে ওঠেন। প্রান্তিক, অনার্য, পীড়িত, ইতরজনের পূজিতা ডাকাতকালী পরবর্তী যুগে প্রেরণা হয়েছেন কৃষক বিদ্রোহীদের, সশস্ত্র বিপ্লবীদের। এই বইতে ধরা আছে তারই আখ্যান। বাংলায় ঠগীদের কালীসাধনা, ডাকাতদের নরবলি, রবিনহুডসম দস্যুদের দেবীপূজা এবং অজস্র ডাকাতকালী মন্দিরের ইতিহাস ও কিংবদন্তী সম্বলিত বইখানি সাবঅল্টার্ন ইতিহাসচর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।

Share:

 
Publisher Khori - খড়ি প্রকাশনী
Binding Paperback
Language Bengali

ইংরেজ শাসনের শুরুর দিকে যখন নির্দিষ্ট বংশানুক্রমিক পেশাগত স্তর থেকে উৎখাত হওয়া মানুষেরা নতুন সামাজিক অর্থনৈতিক স্তরে প্রবেশ কর‍তে পারলনা তারা সমাজ ও পেশা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল যাযাবরের মত। কিন্তু যাযাবরবৃত্তিতে তো দীর্ঘকাল জীবনধারণ করতে পারেনা বাঙালী, তাদের একটা অংশ বেছে নেয় দস্যুবৃত্তি। গড়ে ওঠে বড়বড় ডাকাতের দল আর গ্রামে গ্রামে ডাকাতকালীর থান বা মন্দির। বাঘ যেমন বিশেষ পরিস্থিতিতে নরখাদক হয় তেমনি বাংলার মানুষ পেটের টানে পা বাড়ায় ভয়ংকর অপরাধের পথে। যুদ্ধ বিগ্রহ মন্বন্তর কোম্পানির অত্যাচার, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে করদানে বাধ্য জমিদারের মাত্রাছাড়া জুলুমে বাঙালি বিদ্রোহী হয়, তাদের সাহেবরা নামকরণ করে ডাকাত। কৃষক বিদ্রোহী আর সাধারণ ডাকাতের সাথে পার্থক্য করেনি বলাই বাহুল্য। যৌবনের রত্নাকর তপস্যার ফলে হয়েছিলেন বাল্মিকী আর বাংলার ক্রমবিস্তৃত নৈরাজ্য শান্তিপ্রিয় নিরীহ শ্রমজীবী মানুষকে ঠেকে দেয় অপরাধের পথে। বিনয় ঘোষের মতে ‘ডাকাতরা কি কেবল পুলিশ অভিধানের সংজ্ঞানুসারে ডাকাত? অথবা তার চেয়ে বেশি কিছু? তাদের দস্যুবৃত্তির চেতনার সঙ্গে গনমুক্তির রাজনৈতিক বিপ্লবচেতনা মিশিয়ে দিতে পারলে রঘু বিশে বদে হয়ত বিপ্লবের ছোটবড় নায়ক হতে পারত, কিন্তু তখন লালপতাকার যুগ ছিলনা, কন্ঠভরা বৈপ্লবিক স্লোগানের যুগ ছিলনা, কালীর যুগ ছিল তাই কালী ছিলেন বিদ্রোহ বিপ্লবের প্রতীক’।
তিনি চিরব্যতিক্রমী, প্রচন্ড তান্ডবের প্রতিমূর্তি, তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর ভেতর অনন্যা। ডাকাতেকালী উপেক্ষিত, প্রান্তিক, অন্ত্যজ ও অপরাধীদের দেবী, রাজনৈতিক জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের অফুরন্ত শক্তি উৎস। ঘোর তমসাচ্ছন্ন রাতে যার আরাধনা করে অগ্নিযুগের সৈনিক বা অন্ধকারের পথিকেরা। তিনি শাস্ত্রের কালীমাতা, স্নেহমহী ভবতারিণী নন, শস্ত্রের পুজারী বাঙালীর এক লৌকিক দেবী, শুধুমাত্র ডাকাতদের আরাধ্যা হয়ে জন্ম নেন, ও মিশে যান সাধারণ সংস্কৃতির ভেতরে।

আর এই দেবীর ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস ধরা পড়ে দুই মলাটের মধ্যে। বাংলার ডাকাতকালী, মিথ ও ইতিহাস গ্রন্থে রয়েছে অজস্র ডাকাতকালী মন্দিরের কিংবদন্তি, ঠগীদের কালীপূজা এবং বাংলার ডাকাতদের নরবলির গল্প।

Book Review

Be the first to review “বাংলার ডাকাত কালী মিথ ও ইতিহাস”

Your email address will not be published. Required fields are marked *

There are no reviews yet.