ফুডপ্যাথি ৩- ভারত জোড়া পথের খাবার ১
Author : Edited by Samran Huda Damu Mukhopadhyay
Publisher : Lyriqal Books - ৯ঋকাল
Publisher | Lyriqal Books - ৯ঋকাল |
ISBN | 978-93-87577-55-8 |
Pages | 240 |
Binding | Hardbound |
Language | Bengali |
কাশ্মীরের যেকোনও মহল্লার কান্ডুরে উঁকি দিয়ে সোট গিরদায় কুশল বিনিমিয় করে থাকলে জেনেই গেছেন লিস্টি বানিয়ে লাভ নেই, শিকারায় বা পথে পথে খুঁজে নিন নিজের প্রাণের আরাম। নাদের মঞ্জে বা তিল কারে আপনাকে নিরাশ করবে না। কিন্নরিদের সংস্রব এড়িয়ে দূরে পাইন বনের আড়ালে নিজেদের স্বাধীন উপনিবেশ আজাদ কাশ্মীরে ট্রাউট মাছ ভাজায় মন যদি না ভরে আছে জার্মান বেকারি ভাগসুনাথের পথে। বিয়াসের ওপারে মানালিও বদলে গেল মাছ-ভাতের চক্করে। বছরভর সারা দেশের লোক বেড়াতে যান বলে মানালির স্ট্রিট ফুড ক্রমশ তার মৌলিক চরিত্র হারিয়ে কসমোপলিটান। লোকাল ডেলিকেসির জন্য ঢুঁ মারতে হবে শহরের পুরনো মহল্লায়, যার পোশাকি নাম ওল্ড মানালি, পাবেন বাবরু অধিকাংশ মিঠাইয়ের দোকানে। সেখানেই মিলবে পাটান্ডে— যা দুধ চিনি ও আটা সহযোগে তৈরি এক ধরনের মিষ্টি। ভে নামে এক বিচিত্র খাবার পেতে পারেন কুলু শহরের ধাবায়। পদ্মফুলের ডাঁটি হল ভে-এর প্রধান উপাদান— মানালি স্পেশাল কেক। দেশভাগের ধূপ জ্বেলে পাঞ্জাব আর বাংলা এই একজায়গায় এক থালায় বসে ভাত খায় আজও। অথবা খান কুলচা, অথবা লস্যি এক গ্লাসে। গিয়ানীর পেঁড়ার লস্যি টের পাইয়ে দেবে যে আপনি পাঞ্জাবের সর্বাধিক ঐতিহ্যমণ্ডিত শহরে এসেছিলেন। মশলার মৌতাত ছাড়া দিল্লির চাঁদনি চৌক-এর চত্বর চরিত্রহীন। কোনও গলি জুড়ে ছাল ছাড়িয়ে মশলা মাখিয়ে পরপর শিকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে গোটা মুর্গি। কোথাও মালাই তৈরি হচ্ছে রাতের মোগলাই স্ট্যু-এর জন্য। সঙ্গে আফগানি চিকেন, মটন জালফ্রেজি, চিকেন কালিমির্চ, আর শামি কাবাব খেয়ে আইঢাই করা উদর-সমাধানে, বরফ কুচি দেওয়া খুনখারাবি রং-এর তরমুজের রস।
নরক অন্ধকারের মতো কালো কড়াই, কুম্ভীপাকের তেলের বয়সি গামলা গামলা ফুটন্ত কটাহ তৈল, সিসে লাল রং জিলিপি।বনারসে চারদিকে যে ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মান্য করার আয়োজন তা দেখে বলবেন, কে এখানে খেয়ে মরতে যায়? রাজস্থানের মাণ্ডোরের ষাট বছরের পুরনো দোকানে ‘বেসন কি চাক্কি’ খেলে আর কোথাও এটা খেতে মন চাইবে না। কেবল এই একটিই মিষ্টি তৈরি হয় সেখানে। খদ্দেররা লাইন লাগান। খুব অল্প সময়ে ঝাঁপ পড়ে যায়। বরোদার নিজামপুরার গাছতলার দোকানে আশেপাশে অটো চালকেরা কিভাবে খাচ্ছে সেটা খেয়াল করুন। একপ্লেট সেউ উসালে নিয়ে রসা বা ঝোল ঢেলে, পাওটাকে ছোট ছোট টুকরো করে ছড়িয়ে দিচ্ছে আরও সেউ, লেবুর রস এবং কুচো পেঁয়াজ। যারা খুব ঝাল খাচ্ছে তারা কেউ কেউ পাশে রেখেছে এক প্লেট বুন্দি। মাঝেমাঝে একটু করে মুখে ফেলে ঝাল কাটিয়ে নিচ্ছে। মগের ঝোল ফুরিয়ে গেলে ‘রসা রসা’ বলে হাঁক পাড়ছে। একদিকে বান্দ্রা ব্যান্ডস্ট্র্যান্ড, জুহু বা গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়ার মতো টুরিস্ট স্পটের পাশে হাজির খাবারের নানা পীঠস্থান। হাজি আলি দরগা বা মহালক্ষ্মী মন্দিরের আসে পাশেও আছে নানা খাও গলি জুড়ে মুখরোচক খাবারের সন্ধান। পর্তুগীজ বেকাররা গোয়াতে শুরু করেছিল কনফেশনারি। পর্তুগীজদের বিশেষত্ব ছিল পেস্ট্রি তৈরি— দারিওলস। একদম নতুন স্বাদের খাবার ভারতীয়দের জিভে। এখনও সেই ঐতিহ্য ঝলসে দেয় অহরহ। এক্সিবিশন রোড পাটনা শহরের বড়বাজার, চাঁদনি আর এসপ্ল্যানেড রোলড ইনটু ওয়ান। এইবার ইদিকউদিক তাকাতে তাকাতে, নির্বিকার পুলিশ, উন্মত্ত ট্রাফিক, মাইকেল শুমাখারাকাঙ্ক্ষী রিকশাওয়ালা, ব্যক্তিত্ববান ষাঁড়, এসব এড়িয়ে পৌঁছে যান পুষ্পবিহার বিল্ডিং। কোণের দিকে যে বাটাটাপুরিওয়ালাটিকে দেখছেন, ওখানে গিয়ে হাসিমুখে দুপ্লেট বাটাটাপুরি অর্ডার করুন। শাস্ত্রে বলেছে এ জিনিস একবার খেলে পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে।
Book Review
There are no reviews yet.