হলদে পাখির পালক
Author : Leela Majumder - লীলা মজুমদার
Publisher : Lalmati - লালমাটি প্রকাশন
Publisher | Lalmati - লালমাটি প্রকাশন |
ISBN | 9789381174333 |
Pages | 88 |
Binding | Hard cover |
Language | Bengali |
About the Author
লীলা মজুমদারের জন্ম ১৯০৭ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। প্রথম গল্প লেখেন 'লক্ষ্মী ছেলে’ পারিবারিক পত্রিকা ‘সন্দেশ’-এর জন্য। প্রকাশিত হয় ‘দিন দুপুরে’। প্রায় চল্লিশ বছর সম্পাদনা করেছেন ‘সন্দেশ’ পত্রিকার। ষাটের দশকে ওঁর লেখা ‘আর কোনখানে’ বইটির জন্য পেয়েছিলেন রবীন্দ্র পুরস্কার। আশির দশকের শেষ দিকে বিশ্বভারতী কর্তৃক পেয়েছিলেন ‘দেশিকোত্তম' সম্মান। ওঁর বিখ্যাত কয়েকটি লেখা— টং লিং, হলদে পাখির পালক, পাকদণ্ডী, খেরোর খাতা, আমিও তাই, সব ভুতুড়ে, গুপির গুপ্তখাতা, বাতাসবাড়ি, নাকু গামা, শ্রীমতী, জোনাকি, ভুতোর ডাইরি, গুপি পানুর কীর্তিকলাপ প্রভৃতি। শতবর্ষ ছুঁইছুই সময়ে ২০০৭ সালের ৫ এপ্রিল নিরানব্বই পূর্ণ বয়সে প্রয়াত হন লীলা মজুমদার।
Book Review
1 review for হলদে পাখির পালক
লীলা মজুমদার সাহিত্যের অমোঘ উপকরণ হিসেবে ‘ডাইগ্রেশন’-এ বিশ্বাস করতেন৷ প্রকৃত প্রস্তাবে ‘হলদে পাখির পালক’-এ শুরু থেকে শেষের গতিপথটুকু অত্যল্প, মধ্যবর্তী আলো-আঁধার জুড়ে কেবলই ডাইগ্রেশন৷ এক স্বপ্ন থেকে অন্য স্বপ্নের পথে৷ যে পথে হাঁটার জন্য ঝগড়ু বোঁটার কাছে রুপো দিয়ে বাঁধানো একটা কালো গোল ফল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়৷ সেই ফল কাছে থাকলে ‘লোকে স্বপ্ন দেখে বোগিদাদা, আর কোনো দুঃখু তার গায়ে লাগে না৷ নেশা করবারও দরকার লাগে না৷’ শিশুপাঠ্য এই খোয়াবনামার কথক ঠাকরুন অকুতোভয়৷ মধ্যবিত্তের সাবেকি নীতিবাগীশতার ধার ধারেন না তিনি৷ ঝগড়ুর ঠাকুর্দা নেশা করতেন জেনে রুমু বলে, ‘দিদিমা বলেছেন খারাপ লোকেরা নেশা করে৷’ উত্তরে ঝগড়ু বলে, ‘তা বলতে পার তোমাদের ইচ্ছে হলে, তবে কী জান, খারাপ লোকেরা তো ভাতও খায়৷’ তার পর ঝগড়ু শোনায় তার ঠাকুর্দার নেশা করার কারণ৷ অতটুকু জায়গাতে তার ঠাকুর্দার কুলাত না৷ তাই নেশার পাখায় ভর করে দুঃখের এই ছোটো গন্ডির বাইরে উড়াল দিতে হত৷ জানি না কোনও শিশুপাঠ্য কাহিনিতে আর কেউ এহেন সাহস দেখিয়েছেন কি না৷ তবে এ স্বপ্ন ঠিক ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্ন নয়৷ ঘুমোলে কি আদৌ স্বপ্ন দেখা যায়? রুমুও জানে- ‘যখনি ঘুম ভেঙে যায়, তখনই দেখি জেগে আছি৷’ ঘুম আর জেগে থাকার মধ্যে যে আবছায়া অনিকেত অঞ্চল, সেখানেই বাসা বাঁধে এই সব স্বপ্নরা৷ তাদেরও পালিয়ে যাওয়া ভুলোর মতো লালনপালন করতে হয়, গুণমণির লতার মতো তাদের গোড়াতেও জল দিতে হয়৷ তবেই চাঁদের আলোতে লখনিয়ার সামনে দেখা দেয় সেই ময়ূর-বালিকা৷ আর আস্তাকুঁড়ের শিম গাছে ফুটে ওঠে ‘ছড়া ছড়া ফুল, ফিকে নীল, গাঢ় নীল, বেগনি, গোলাপি, আশ্চর্য তাদের রং, প্রজাপতির মতো গড়ন, মিহি একটা সুগন্ধ’৷ কিন্ত্ত এই স্বপ্নকে চাইলেই পাওয়া যায় না, তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়৷ যেমন লখনিয়া অপেক্ষা করেছিল৷ আমৃত্যু৷ চল্লিশ বছর৷ আর লখনিয়ার মতো যারা নশ্বর জীবনের মানে খুঁজে পায় সেই স্বপ্নকে চাওয়ার মধ্যে, তাদের সবার জন্য বটফল খেতে আসা সোনালি পাখিরা রেখে যায় একটা হলদে পাখির পালক৷
Sangita Ukil –