উত্তরে আছে মৌন – সৈকত ভট্টাচার্য
Author : Saikat Bhattacharya
Publisher : Manikarnika - মণিকর্ণিকা
Out of stock
Publisher | Manikarnika - মণিকর্ণিকা |
Language | Bengali |
বোদরাজ্যের রাজা
গরম লাগে তো তিব্বত গেলেই পারো! – বিরক্তিভরে কথাটা বলে পাশ ফিরল শুভ।
চেন্নাইয়ের গরমে ঘরে বসে সিদ্ধ হচ্ছি সবাই। এই এপ্রিল-মে মাস জুড়ে এখানে যে ‘অগ্নিনক্ষত্রম’ অর্থাৎ সূয্যিমামার চোখ-রাঙানি সহ্য করতে হয়, তার থেকে পরিত্রাণের উপায় ছিল আমাদের আপিস। সূয্যিদেবের ওয়ার্ম আপ করার মধ্যে আপিসের ঠান্ডায় সুড়ুৎ করে ঢুকে পড়ো, আর একেবারে অন্ধকার হয়ে ফুরফুর করে সমুদ্রের বাতাস বইতে যখন শুরু করবে তখন বের হও। এই পলিসি নিয়ে কটা বছর দিব্যি কাটল। এ-বছরটাও আলাদা কিছু হওয়ার কারণ ছিল না যদি না করোনার হামলাটা ঘটত।
লকডাউনের চক্করে সবাই ঘর-বন্দি। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরনো না-মঞ্জুর। ব্যাচেলর জীবনের বেসিক নিড – দুবেলার খাবার আর ল্যাপটপ – এসব তো মজুত আছেই। সবজিওলা আর অ্যাপার্টমেন্টের মধ্যেকার একটা ছোটো দোকান ফ্ল্যাটের দরজায় নিত্যদিনের মাল সরবরাহ করছে। জ্বালা শুধু এই ‘গরমি’কে নিয়ে। বাড়িওয়ালা মিঃ সুধাকর ঘরে একখানা উইন্ডো এসি লাগিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ওভারটাইম খেটে খেটে দিন দুয়েক হল সে-যন্ত্রটি দেহ রেখেছেন। অভ্যেস না থাকলে যা হয়!
এই ওয়ান বি-এইচ-কে ফ্ল্যাটে আমরা তিনজনই বাঙালি। ঘরে তিনখানা সিঙ্গল-খাট, বাড়িওলাই পেতে দিয়েছেন। তার একটায় আমি, পাশেরটায় আমার কোম্পানির আইটিতুতো ভাইটি শুভ, আর অন্যটায় জয়দা। জয়দা আমার চেয়ে বছর চারেকের বড়ো। আপিসের কাজের বাইরে ওর একমাত্র এন্টারটেইনমেন্ট হল বই। বাকিসব ইচ্ছে-অনিচ্ছেকে জয়দা কী করে জয় করেছে তা বাতলাতে গেলে ঢাউস উপন্যাস হয়ে যাবে!
বেলা খানিক গড়াতেই সেই অকৃতদার ইন্দ্রিয়বিজয়ী অপারজ্ঞানময় উঠে বসে হাতের বইটি বিছানার উপর রেখে পাশে খুলে রাখা স্যান্ডো গেঞ্জি দিয়ে কপাল মুছে যখন বলল, ‘বাপরে! কী গরম রে!’, তখনই সুযোগ বুঝে শুভর টিপ্পনি – গরম লাগে তো তিব্বত গেলেই পারো!
Book Review
There are no reviews yet.